মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক নাছরীন আক্তার জানান, ২০২৪ সালের প্রথম আট মাসে ফেনী জেলায় ২১টি বাল্যবিয়ের চেষ্টা প্রতিহত করা হয়েছে।
এ তথ্যে দেখা যায়, ফেনীতে মাসে গড়ে প্রায় ২.৬৩টি বাল্যবিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। এসব ঘটনার ৬টিতে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
জেলায় শূন্যের ঘরে আসেনি কন্যা শিশুর বিয়ের সংখ্যা। কন্যা শিশু বিয়ে দিয়েছেন কিংবা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন এমন পরিবারের সংখ্যাও একদম কম নয়।
এ প্রসঙ্গে প্রচলিত আইনভীতির চেয়ে শিশু হলেও কন্যাকে ‘উপযুক্ত পাত্রস্থ’ করা অধিক গুরুত্বপূর্ণ বলে একাধিক পরিবারের সাথে কথা বলে জানা গেছে।
২০২২ সালের জনশুমারি হতে দেখা গেছে, ফেনীতে ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী কন্যা শিশুর গড় বিয়ের হার ১ দশমিক ৮৩ শতাংশ। অর্থাৎ, জেলায় ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী ৮৩ হাজার ৬৯৯ জন কন্যা শিশুর মধ্যে ১ হাজার ৫৩১ জন কন্যা শিশু বিবাহিত।
চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি পরশুরামে ৮ম শ্রেণীর ছাত্রীর বিয়ের আয়োজন করার দায়ে মায়ের ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজা হাবিব শাপলা।
বাল্যবিয়ে দণ্ডনীয় অপরাধ জেনেও ১৩ বছর বয়সী কন্যার বিয়ে দিয়েছেন ফুলগাজীর আমজাদ হাট ইউনিয়নের একটি পরিবার। কন্যা শিশুটির মা জানান, নিজের কন্যা শিশুকে প্রবাসী পাত্র পাওয়ায় বিয়ে দিয়েছেন, কাবিনে বয়স উল্লেখ করেছেন ১৮ বছর।
একইভাবে, সদরের ফরহাদ নগর ইউনিয়নের একটি পরিবার ২০১৯ সালে ১১ বছর বয়সে কন্যা শিশুর বিয়ে দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। এ পরিবারও আর্থিক স্বচ্ছলতার কথা ভেবে প্রবাসীর সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দেন।
কন্যা শিশুর বিয়ে প্রসঙ্গে নাছরীন আক্তার বলেন, উপযুক্ত পাত্র খোঁজার বিষয়টি সাধারণত নিম্নবিত্ত পরিবারে বেশি দেখা যায়। পরিবারগুলোতে সচেতনতা গড়ে তুলতে নিয়মিত কাজ হয়ে থাকে। তবে বাল্য বিয়ের ক্ষতি জেনেও কিছু পরিবার এমন ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা করে। আমরা খোঁজ পেলেই বাল্যবিয়ে বন্ধের ব্যবস্থা করি।
জনশুমারি ২০২২ এ আরও দেখা যায়, জেলায় মেয়েদের গড় বিয়ের বয়স ১৯ দশমিক ৫৮ বছর। তবে ১৫ হতে ১৯ বছর বয়সী মেয়েদের মধ্যে ২৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ বিবাহিত।