রাজশাহীর বাঘায় দীর্ঘ ছয় দশকের জমি-সংক্রান্ত বিরোধ আংশিকভাবে নিষ্পত্তি হয়েছে গ্রাম্য শালিসের মাধ্যমে। বাউসা ইউনিয়নের ফতিয়াদাড় গ্রামে বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত এই বড় পরিসরের শালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
শালিসে উপস্থিত ছিলেন—বাউসা ইউপি চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুল জলিল, উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সহকারী অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন, বাউসা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ রেজাউল করিম, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন, বাঘা প্রেস ক্লাবের আহ্বায়ক আব্দুল লতিফ মিঞা, বিএনপি নেতা আব্দুর রশিদ মাস্টার, রাজশাহী জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হক, মনিগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ মুকুলসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
দীর্ঘ সময় উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনা, আদালতের রায়, পরিমাপ, নথিপত্র ও পুরোনো দলিল যাচাইয়ের পর সালিস কমিটি একমত সিদ্ধান্তে পৌঁছে।
জানা যায়, ফতিয়াদাড় গ্রামের মৃত তজিম উদ্দীনের ছেলে নাজিম উদ্দীন লাল্টু ও মৃত জেকের আলীর ছেলে আরিফুল ইসলামের মধ্যে পারিবারিক উত্তরাধিকার ও ক্রয় সূত্রে পাওয়া জমি নিয়ে প্রায় ৬০ বছর ধরে বিরোধ চলছিল। স্থানীয়ভাবে একাধিকবার অভিযোগ, থানায় জিডি এবং আদালতে মামলা করেও জটিলতায় দীর্ঘসূত্রতা দেখা দেয়। এতে দুই পরিবারের সম্পর্কও তিক্ত হয়ে ওঠে।
সালিস সূত্রে জানা যায়, নাজিম উদ্দীন লাল্টু পাচপাড়া মৌজায় তার প্রাপ্য ৭ একর ২৫ শতাংশ জমির চেয়ে ২ একর ২২ শতাংশ বেশি—মোট ৯ একর ৪৭ শতাংশ জমি ভোগদখলে রেখেছিলেন। এই অতিরিক্ত অংশ নিয়েই আরিফুল ইসলামের সঙ্গে দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছিল।
সালিস কমিটি আদালতের রায় ও কাগজপত্র যাচাই শেষে নাজিম উদ্দীন লাল্টুর দখলে থাকা জমির মধ্যে ৭৫ শতাংশ (প্রায় আড়াই বিঘা) জমি আরিফুল ইসলামকে ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেয়।
শালিসের সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুল জলিল জানান, সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সার্ভেয়ারের মাধ্যমে আরিফুল ইসলামকে ৬৩ শতাংশ জমি হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান থাকায় আগামী ১৩ ডিসেম্বর পরবর্তী শালিসে তা নিষ্পত্তি করা হবে।
সার্ভেয়ার মামুনুর রশিদও নিশ্চিত করেন যে, আরিফুল ইসলামকে ৬৩ শতাংশ জমি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। উভয় পক্ষ সালিসি সিদ্ধান্তের বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছে।
