দুটি অচেনা মানুষ হঠাৎ একসঙ্গে থাকা শুরু করে কোন
এক মন্ত্র বলে। বিছানা, বালিশ, বাথরুম, টাওয়েল,
আলমিরা, খাবারের টেবিল সবকিছুতে অংশীদারিত্ব
চলে আসে। দুজনে হাসিমুখে, আনন্দচিত্তে সব কিছু ই
ভাগাভাগি করে মেনে নেয়। তাদের সুখ দুঃখ, ভালোলাগা
মন্দলাগা, সবকিছুতেই সহ অবস্থান তৈরি হয়।
অচেনা মানুষ ধীরে ধীরে চেনা হয়। ভালোবাসা বাড়ে।
আবেগ, অনুভূতি, সহানুভূতি, সহনশীলতা, বিশ্বস্ততা
বাড়ে। একটি পর্যায়ে দুজনের মধ্যে কোন ব্যবধান
থাকেনা। যেমন দেহে তেমনি মনেও। আমৃত্যু এভাবেই
রয়ে যায় স্বামী স্ত্রীর বিনি সুতোর প্রেম।
আজকাল এমন দম্পতির সংখ্যা কমে যাচ্ছে ।
দাম্পত্য জীবন এখন অনেকটা ছেলে খেলার মত হয়ে
গেছে। যেমন ধরেন পায়ের জুতার মত। লাগলে ভালো
না লাগলে ছুঁড়ে ফেলে দিতে কেউ কুন্ঠা করে না। অথচ
এক সময় মানুষ কত মানিয়ে শেষ পর্যন্ত টিকে থাকার
চেষ্টা করতো। এখন মানুষের চেষ্টা করার ধৈর্য কমে গেছে।
এখনকার দম্পতিদের বেলায় এমন খুব কম দেখা যায়।
আগের দিনের সেই স্পর্শকাতরতা কোথায় যেন
মিলিয়ে গেছে, কোথায় যেন তাঁর ছিঁড়ে গেছে। এক
সময় যত সমস্যাই সামনে এসে দাঁড়াতো প্রবল ঝড়ে ও
দুজনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ঘরগুলো টিকে থাকতো।
উঠোনে নতুন বীজ রোপন হতো,মাঠ ভরে যেতো নতুন
সোনালী ফসলে। আর এখন ঝড় উঠলে মানুষ দরজা
খুলে দেয়। উত্তাল হাওয়া এসে পর্দা সরিয়ে ঘরের চাল
উড়িয়ে নেয়। ঘর ভেঙে পড়ে। না থাকে বসত না আশ্রয়।
অথচ দুজনের একটু সতর্কতা, একটু যত্ন, একটু
সহনশীলতা তাদের জীবনের শেষ সীমানায় পৌঁছতে সক্ষম হতো।
যেকোনো সম্পর্ক যত্ন দিয়ে, সম্মান দিয়ে
টিকিয়ে রাখতে হয়। চরিত্র আর ব্যবহার খুব মূল্যবান।
এদের যত্ন খুব প্রয়োজন। মানুষের জীবনে খারাপ
সময় চিরদিন থাকে না। কিন্তু খারাপ ব্যবহার মনের
ভেতর গেঁথে থাকে। যতটা সম্ভব নিজের ব্যবহার সুন্দর
রাখতে পারলে পুরো সম্পর্কগুলো সুন্দর থাকবে।
একটি বই এতটা জ্ঞান দিতে পারে না, যতোটা অনুকুল অথবা প্রতিকূল পরিস্থিতি দিতে পারে।
পরিবেশ পরিস্থিতিতে অর্জিত জ্ঞান সবচেয়ে মূল্যবান জ্ঞান।

✍️ দিলরুবা আক্তার পারভীন
