শাড়ি নিয়ে তানজিন তিশা’র নয়া কেলেঙ্কারি
দেশের বিনোদন অঙ্গনে একের পর এক বিতর্ক তৈরি করে নতুন বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন মডেল অভিনেত্রী তানজিন তিশা। নারী উদ্যোক্তা ফ্যাশন ডিজাইনার আয়েশাহ আনুম ফায়যাহ সানায়া চৌধুরী তিশার বিরুদ্ধে রাজধানীর গুলশান থানায় ১২ নভেম্বর সাধারণ ডায়েরী (জিডি নং ৯৮৫) করেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, শাড়ি ফেরত দেওয়ার পরিবর্তে তিশা’র কাছ থেকে নানা গালি-গালাজ ও প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছেন। ফলে বর্তমানে তিনি নিরাপত্তাহীনবোধ করছে।
ওই জিডিতে আয়েশাহ (সায়ানা কুটির ফ্যাশন হাউজের কর্ণধার) উল্লেখ করেন, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪ সালে তিনি তিশাকে এক অনুষ্ঠানের জন্য ৭৫,০০০ টাকার একটি শাড়ি প্রদান করেন। পরদিন শাড়ি ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও তিশা তা ফেরত দেননি। শাড়ি ফেরত চাওয়ার প্রয়াসে কয়েকবার মোবাইল ও ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগ করলে, ১৭/১২/২০২৪ তারিখে তিশা অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ ও ‘জানে মেরে ফেলার’ হুমকি দেন, যার কিয়দাংশ তার কল রেকর্ডিংয়ে রক্ষিত আছে – উল্লেখ করেন অভিযোগকারী। পরে ১৩/০৩/২০২৫ ও ১৮/০৫/২০২৫ তারিখে একটি পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে তিশা’র সঙ্গে দেখা হলে শাড়ি ফেরত চান; কিন্তু তিশা শাড়ি দিতে অস্বীকার করেন। শাড়ি না পেয়ে ০৫ নভেম্বর গণমাধ্যমে তিশার বিরুদ্ধে সংবাদ দেখে পুনরায় শাড়ি ফেরত দেওয়ার অনুরোধ করলে তিশা তাকে হুমকি দেন বলে অভিযোগ ওঠে।
জিডিতে আরও বলা হয়েছে, গেলো ০৬/১১/২০২৫ তারিখে আয়েশাহ’র স্টুডিওর ফটোগ্রাফার ঝুটুন শাড়ি ফেরত চাওয়ার জন্য তিশা’র সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিশা অপমানজনক মন্তব্য ও হেনস্তা করেন। ০৭/১১/২০২৫ তারিখে তিশা ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে মামলা – হুমকি ও সামাজিকভাবে কলঙ্কিত করার হুমকি দেন। ১০/১১/২০২৫ তারিখে তিশা আরও একবার লেখেন, তার ব্যবসা নষ্ট করে দিবে ও তার ডিজাইনকৃত কাপড় কেউ পরবে না – এমন হুমকির কথাও জিডিতে উল্লেখ আছে। এসবের ফলে অভিযোগকারী জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।
তিশা’র সঙ্গে ঘটা ঘটনার প্রমাণ হিসাবে আয়েশাহ সাংবাদিকদের কাছে তিশার সঙ্গে কথোপকথনের কয়েকটি কল রেকর্ডিং ও ফেসবুক ম্যাসেজ দেখান। একটি রেকর্ডিংয়ে শোনা যায় তিশা অভিযোগকারীকে বলেন, তোমাকে নিয়ে আমার ডিবিতে বসতে হবে। আর আমি যদি তোমার পেছনে লাগি তাহলে তুমি বাঁচতে পারবে না। অন্য একটি অডিওতে শোনা যায়, তিশা এবং ভুক্তভোগী ওই নারী উদ্যোক্তা শাড়ি নিয়ে নানা ধরনের কথা বলছেন। কথা বলার একপর্যায়ে তিশা উত্তেজিত হয়ে হুমকি দিয়ে বলেন, তোমার ফেমাস হওয়ার ইচ্ছে করলে আমাকে বইলো আমি তোমার ছবি আপলোড দিয়ে দেব সাথে খুব ভালো ক্যাপশন দিয়ে।
উল্লেখ্য, তানজিন তিশা সম্পর্কে এ ধরনের অভিযোগ নতুন নয়। সম্প্রতি এক অনলাইন ফ্যাশন পেজের পক্ষ থেকে প্রতারণার অভিযোগে ৪২০/৪০৬ ধারায় মামলা (সি.আর. নং ৯৬২/২০২৫) দায়েরের পর তদন্তের নির্দেশ পেয়েছেন তিনি; সেই মামলাটিও চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নজরে আছে এবং ডিবিকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। যদিও এই ঘটনা নিয়ে তানজিন তিশা’র পক্ষ থেকে এখনও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিষয়টি নিয়ে আয়েশাহ আনুম ফায়যাহ সানায়া চৌধুরী বলেন, ফ্যাশন ডিজাইনার ও শিল্পীদের সঙ্গে সম্পর্ক খুব ভালো হবে এটাই স্বাভাবিক। কারণ একে অপরের পরিপূরক। তানজিন তিশা আমার কাছে আগেও ড্রেস নিয়েছে। কিন্তু সব সময়ই সেগুলো ফেরত পাওয়ার জন্য অনেক অনেক অনুরোধ করার পর ফেরত পেয়েছি।
এবার আমার ৭৫ হাজার টাকা মূল্যের একটি শাড়ি আটকে দিয়েছে। শাড়িটি অনুষ্ঠানে পরে আর আমাকে ফেরত দেননি তিনি। অসংখ্যবার তাকে অনুরোধ করেছি। শাড়ি চাইতে গেলেই প্রসঙ্গে পাল্টে অন্য ধরনের কথা বলেন আমার সঙ্গে। ঠান্ডা মাথায় আমাকে হুমকি দেন। এক পর্যায়ে আমাকে ডিবিতে নিয়ে যাবেন এবং প্রাণনাশের হুমকি দেন। কিন্তু তিশা আমাকে যেভাবে একের পর এক হুমকি দিচ্ছে সেটা নিয়ে আমি খুব শঙ্কিত। তাই জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে বাধ্য হয়ে আমি আইনের দারস্থ হয়েছি। আমার কাছে সকল প্রমাণ আছে।

















