রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

হাকিকুল ইসলাম খোকন

বেদান্ত সোসাইটির দুর্গোৎসবে মেয়র নির্বাচনে হিন্দু কম্যুনিটির পক্ষে কোমোকে এনডোর্সমেন্ট

ডেস্ক নিউজ
ডেস্ক নিউজ প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৫, ৪:১৪ পিএম | 103 বার পড়া হয়েছে
বেদান্ত সোসাইটির দুর্গোৎসবে মেয়র নির্বাচনে হিন্দু কম্যুনিটির পক্ষে কোমোকে এনডোর্সমেন্ট

, বাপসনিউজঃ এবারের নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচন দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মধ্যে হবে না, হবে দুই ফিলোসফির মধ্যে। আমার সাথে মামদানির পার্থক্য হচ্ছে আমি এই সিটি গড়ে তুলতে যে দর্শনে বিশ্বাস করি, তিনি তা করেন না। আমি ম্যানেজমেন্ট বুঝি। এই সিটির জন্য যে ম্যানেজমেন্ট প্রয়োজন আমি আপনাদের তাই উপহার দেব।খবর আইবিএননিউজ ।
গত রবিবার আগামী ৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী সাবেক গভর্নর এ্যান্ড্রু কোমো তার বক্তব্যে এসব কথা বলেন। তিনি বেলরোজে গোল্ডেন ইয়ার্স পার্টি হলে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ বেদান্ত সোসাইটি নিউইয়র্ক আয়োজিত শারদীয় দুর্গোৎসবে বক্তব্য রাখছিলেন।
সোসাইটির সভাপতি পূর্ণচন্দ্র মুখার্জির সভাপতিত্বে এবং অসীম সাহার সঞ্চালনায় আয়োজিত এই জনাকীর্ণ দুর্গোৎসবে ভক্ত পরিবেষ্টিত এ্যান্ড্রু কোমো বলেন, আমরা বিশ্বাস করি অপরচুইনিটিতে, আমরা বিশ্বাস করি অর্থনৈতিক উন্নয়নে, আমরা বিশ্বাস করি আইন—শৃঙ্খলা রক্ষায়, আমরা বিশ্বাস করি জনগণের নিরাপত্তায় এবং আমরা মনে করি নিজ ঐতিহ্য ও গরিমায়। নিউইয়র্ক নিউইয়র্কই।
শুরুতে নিউ আমেরিকান ভোটার এ্যাসিস্ট্যান্সের চেয়ারম্যান, কম্যুনিটি বোর্ড মেম্বার এবং কম্যুনিটি এক্টিভিস্ট ড. দিলীপ নাথের পরিচালনায় আয়োজিত পর্বে তিনি সংক্ষেপে নিউইয়র্কে বাংলাদেশীদের সম্পর্কে ধারণা তুলে ধরেন এবং গভর্নর কোমোর নির্বাচনে সার্বিক সহায়তার আশ্বাস দেন। এ পর্যায়ে বক্তব্য রাখেন নিউইয়র্ক স্টেট এসেম্বলিম্যান ডেভিড ওয়েপ্রিন। তিনি গভর্নর কোমোকে এই মেয়র নির্বাচনে সবচেয়ে সফল প্রার্থী হিসাবে আখ্যায়িত করেন। গভর্নর কোমো বলেন, ডেভিড ওয়েপ্রিন আমার দীর্ঘদিনের বন্ধু। তার বাবা কুইন্সের বিখ্যাত মানুষ সোল ওয়েপ্রিন ছিলেন আমার বাবার বন্ধু।
এ্যান্ড্রু কোমো বলেন, মেয়র নির্বাচিত হলে, এই সিটিকে সকলের জন্য বাসযোগ্য করার লক্ষ্যে, কাজ করার জন্য এবং এগিয়ে নিতে সকলকে নিয়ে সকলের জন্য প্রতিদিন নিরলস কাজ করব।
তিনি বলেন, আমি সবকিছু বিনামূল্যে পাওয়ায় বিশ্বাস করি না। কিন্তু আমি চাই জীবনধারণের খরচ কমাতে, পথঘাট ও সাবওয়ে নিরাপদ করতে এবং উচ্চমানের সরকারি শিক্ষায়।
মেয়র এরিক এডামস নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাঠ থেকে সরে যাওয়ায় তিনি তার প্রশংসা করে বলেন, তিনি ১০০% সৎ তার কাজে। এরিক এডামস স্টেট সিনেটর হিসাবে, ব্রুকলীন বরো প্রেসিডেন্ট হিসাবেও সফল ছিলেন। তিনি নিউইয়র্কের মানুষদের অত্যন্ত সুন্দরভাবে সেবা করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, আমাদের সিটির অন্যতম গৌরবের জায়গা হচ্ছে ডাইভারসিটি। আমরা সেই ডাইভারসিটিকে সেলিব্রেট করতে চাই।
ডা. দিলীপ নাথ তার বক্তব্যে বলেন, আমরা বিভেদ চাই না, আমরা ভাগাভাগি চাই না। আমরা একজন মানুষকে মেয়র নির্বাচন করতে চাই, যিনি এই সিটিকে কোনো নির্দিষ্ট গ্রুপের জন্য নয় সকলের জন্য বাসযোগ্য করতে চান।
ডা. নাথ বলেন, কুইন্সের মানুষ প্রায় ২০০ ভাষায় কথা বলে। ১৯৩টি দেশের মানুষ এখানে বাস করেন। এই জন্যই কুইন্স স্ট্রং বরো।
তিনি বলেন, গত তিন দশক যিনি এই স্টেটকে সেবা করছেন, ফেডারেল সরকারের সেক্রেটারি এবং স্টেটের গভর্নর হিসাবে ও স্টেটের এটর্নি হিসাবে, মারিও কোমো ব্রিজ, লাগোয়ার্ডিয়া এয়ারপোর্ট, জেএফকে, ময়নিহ্যান ট্রেন স্টেশন এই রকম অজ¯্র উদাহরণ দেয়া যায় সেগুলোর অবয়ব পরিবর্তন করে দিয়েছেন তিনি। তিনি তার কাজ দিয়ে প্রমাণ করেছেন তিনি অবকাঠামো উন্নয়নে কতটা পারদশীর্, তাকেই আমাদের মেয়র হিসাবে পেতে চাই। তিনি আমাদের নতুন প্রজন্মকে নেতৃত্ব দেবেন।
এই দুর্গোৎসবে সাবেক গভর্নর যখন বক্তব্য রাখছিলেন সেখানে উপস্থিত ছিলেন মি. হরি শুকলা, নেপালি কম্যুনিটির মি. চামা চাকনা, গায়ানিজ কম্যুনিটির মি. বাচ্চু, বেদান্ত সোসাইটির প্রকাশ চক্রবতীর্, মুক্তিযোদ্ধা শরাফ সরকার, হিন্দু বৌদ্ধ খৃস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি ড. দ্বিজেন ভট্টাচার্য, বিদ্যুৎ সরকার ,বিশ্বজিৎ চৌধুরী,শীতের ধর প্রমুখ।
এ্যান্ড্রু কোমোকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন বেদান্ত সোসাইটির সভাপতি রীনা সাহা। মেয়র প্রার্থীকে একগুচ্ছ ফুল দিয়েও শুভেচ্ছা জানানো হয়। আর পুরোহিত টিটন আচার্যি কোমোর হাতে রাখি বন্ধন বেঁধে দেন।
এ সময় ডা. দিলীপ নাথ নিউইয়র্ক সিটির হিন্দু কম্যুনিটির পক্ষ থেকে মেয়র প্রার্থী হিসাবে এ্যান্ড্রু কোমোকে এনডোর্স করার কথা ঘোষণা করেন।
সাবেক গভর্নর পরে উৎসবের বাইরে সাইডওয়াকে সাংবাদিকদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন এবং সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন।উল্লেখ্য,কমেও অপর মেয়র প্রার্থী যোহরান মামদানীর কাছে প্রাইমারি নির্বাচনে পরাজিত হলে যেহরান মামদানী ডেমোক্রেটিক মনোনয়ন পান ।

সুলেখা আক্তার শান্তা

ভাঙনের পর গাঁথন

সুলেখা আক্তার শান্তা প্রকাশিত: রবিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১১:৩০ এএম
ভাঙনের পর গাঁথন

ইমরান ঘুমিয়ে ছিল। হঠাৎ করেই চিৎকার-চেঁচামেচিতে ঘুম ভেঙে যায় তার। চোখ কচলাতে কচলাতে বাইরে এসে দেখে, তার বড় ভাই জামাল, স্ত্রী শেফালীকে মারছে। ভাইয়া, ভাবিকে মারেন কেন? জামাল রাগ শরীর নিয়ে বলে, আমার কথা শোনে না। শুনে না বলেই কি গায়ে হাত তুলবেন?
শেফালী কাঁদতে কাঁদতে বলে, কী কথা শুনি না আমি? যে স্বামী গায়ে হাত তোলে, তার কথা শোনার দরকার কী? আমি আর পারছি না। রান্না ঝাড়ু মারি, আমি আর রান্না করতে পারব না। গাটা আর চলছে না। আমি শেষ। ইমরান এগিয়ে এসে বলল, ঠিক আছে ভাবি, এবার থামেন। ভাইরে আমি বলছি। তুমি ভালো করে বোঝাও তোমার ভাইরে। আচ্ছা যেটা বলার আমি বলছি।
শেফালী বলল, তোমার ভাইরে ভালো করে বলো। এরপর আমারে কিছু বললে আমি চলে যাব বাপের বাড়ি। জামাল কাঁধ ঝাঁকিয়ে বলল, আমিও চাই তুই বাপের বাড়ি চলে যা। তুই থাকলেই শুধু ঝামেলা। শেফালী চোখ সরিয়ে বলল, ঠিক আছে, আমি চলে যাই। ইরমান একটু নরম হয়ে বলল, ভাবি, তোমারে বললাম, তুমি থামো। ভাই যাই বলুক, তার জন্য তুমি চলে যাবে? শেফালী চুপ, চোখে অশ্রু। ইমরান ঘরের কোণে দাঁড়িয়ে আছে। শেফালী তাকে জিজ্ঞেস করে, তোমার ভাই কী বলে, তুমি শোনো না? তোমাদের এই ক্যাচাল দেইখা আমার নিজের বিয়ের ইচ্ছাটাই মরে গেছে। জামাল মুখ নিচু করে থাকে। কিছু বলে না।
শেফালী চোখের পানি আঁচলে মুছে, ধীরে বলে ইমরানকে, দেবর, আমি তোমার জন্য ভালো মেয়ে দেখে দেব। তবে একটা কথা মনে রাখবা। তোমার ভাবির মতো আর যেন কাউকে চোখের পানি ফেলতে না হয়। ইমরান মাথা তোলে, চোখে দৃঢ়তা। ভাবি, আমি একটা কথা বলি, আমি আমার স্ত্রীকে কখনও মারব না। আমি তাকে সুখেই রাখব। শেফালী একটু হেসে দেয়। তা জানি। তুই আলাদা। তোমার ভিতরটা ভালো।
ইমরানের বিয়ের পর, জীবন যেন নতুন আলোয় রঙিন হয়ে উঠলো ইমরানের কাছে। লিজা তার কাছে শুধু স্ত্রী নয়, যেন এক হৃদয়বন্ধু, এক নিঃশর্ত ভালোবাসার প্রতীক। ইমরান প্রতিদিন নিজের ভিতর থেকে এই প্রার্থনাই করে, লিজার যেন কখনও কোনো অভিযোগ না থাকে তার প্রতি। আমি চাই তার সব ইচ্ছা পূরণ করতে।
এক সন্ধ্যাবেলায়, চা হাতে বারান্দায় বসে লিজা হেসে বলল, তুমি তো আমার সব কথা শোনো? সব চাওয়া পূরণ করো। ইমরান জবাবে বলে, না শোনার কোনো কারণ নেই। এক মেয়ে যখন স্বামীর ঘরে আসে, তার বুকভরা আশা থাকে। আর সেই আশা পূরণ করা স্বামীর কর্তব্য। লিজার চোখে তৃপ্তি। সে বলে, তাহলে তো তুমি আমায় সত্যিই ভালোবাসো। বলো, তুমি কি আমার কথা শুনবে?
হ্যাঁ শুনব, উত্তর ইমরানের।
তবে একটা কথা বলি, তুমি বিদেশে যাবে।
চমকে ওঠে ইমরান। বিদেশ!
আমি চাই তুমি বিদেশ যাবে।
বিদেশ? ধীরে বলে সে, তুমি চাইলে যাব। কিন্তু জানো তো, তোমাকে রেখে আমার কোনো কিছু ভালো লাগে না।
লিজা বলে, আমি চাই তুমি যাও। আমার স্বপ্ন, আমার ভবিষ্যৎ সব তোমার ওপর ভরসা করেই সাজানো।
ইমরান একটু থেমে বলল, তোমার স্বপ্ন যদি বিদেশে যাওয়ার সঙ্গে জড়িত হয়, তাহলে আমি সেই পথেই হাঁটব।
ইমরান পাড়ি দেয় বিদেশে। নতুন দেশের আকাশে, সে ভবিষ্যতের সন্ধানে ছুটে চলে। তার মনের গোপনে একটাই ভাবনা, লিজাকে খুশি করা। বেতন হাতে পেলেই লিজার কথা ভাবে। বিদেশি মুদ্রার প্রতিটি টাকাই যেন তার ভালোবাসার প্রতিচ্ছবি। পাঠিয়ে দেয় লিজার কাছে, নাও, তুমি যেভাবে খুশি, খরচ করো।
লিজা টাকা পেয়ে আনন্দে উচ্ছ্বসিত। মার্কেট করে, বন্ধুর সঙ্গে রেস্টুরেন্টে খায়। ফোনে ইমরান বলে, তোমার মনের আশা পূরণ করতে পারি আমি?
লিজা মিষ্টি হাসি দিয়ে বলে, হ্যাঁ, তুমি পারো। আমার কথাগুলো শুনো বলেই তো তোমায় ভালো লাগে। তবে বেশি ফোন কোরো না, বলে, লিজা। ইমরান হেসে ফেলে, কথা না বললে বউয়ের সঙ্গে, তাহলে কার সঙ্গে বলবো? ফোন করে বেশি টাকা খরচ করার দরকার নেই। টাকা যদি খরচ না করি তোমার জন্য, তাহলে কার জন্য করব?
বহু বছর ধরে প্রবাসে দিন কাটাচ্ছে ইমরানের। ক্লান্তি, একাকিত্ব, আর স্মৃতির ঘোরে সে বারবার দেশে ফিরতে চায়। এখন সে আর থাকতে চায় না বিদেশের নিঃস্ব শূন্যতায়, সে দেশে ফিরতে চায়।
ফোনে লিজাকে জানায়, আমি এবার দেশে ফিরতে চাই। মনটা আর থাকতে চায় না।
লিজা হেসে বলে, দেশে আসবা? কী করতে? ওইখানে তো ভালোই আছো। দেশে এসে তো কিচ্ছু করতে পারবা না। ইমরান থেমে যায় একটু। তারপর বলে, আমি দেশে এসে একটা ব্যবসা শুরু করতে চাই। তোমার সঙ্গে জীবনের বাকিটা সময় কাটাতে চাই। লিজার উত্তর তির্যক, তুমি ব্যবসা করবা? দেশে এসে ব্যর্থ হবে। থাকো ওইখানেই। ইমরানের বুকের ভেতর যেন কিছুটা বয়ে বেড়ায়। সে বাস্তব বুঝতে পারলো। ইমরান দিনশেষে শুধু টাকা পাঠায় না, সে পাঠায় নিজের শ্রম, স্বপ্ন আর আশা। ভাবছিল, ফিরবে দেশে, পাশে থাকবে প্রিয়জন। কিন্তু লিজার কথা যেন প্রতিদিন একটু একটু করে আশাকে ঝাপসা করে দেয়। তুমি ওইখানে ভালোই আছো। যখন দরকার হবে তখন বলব আসতে, লিজার কথায় যেন শুধু নির্দেশ, কোনো উষ্ণতা নেই।
ইমরানের জমানো টাকা দিয়ে লিজা জমি কিনে নিজের নামে। ইমরান জিজ্ঞেস করে, টাকাটা দিয়ে তুমি জমি কিনছো, ভালো কথা। কিন্তু তুমি তো আমার নামেও দিতে পারতে। লিজা রেগে যায়। জমি আমার নামে যে কথা তোমার নামেও সেই একই কথা! তুমি চিন্তা কোরো না, জমি কোথাও যাবে না। তবুও, কোথায় যেন একটা দাগ পড়ে যায় হৃদয়ের পাতায়। জমি আর বিশ্বাস দুটোই যেন এখন প্রশ্নের মুখে।
লিজার কথায় ভেতরে ভেতরে চুপসে যায় ইমরান। এত বছর বিদেশে থেকে যা অর্জন করেছে, সে সবই তো পাঠিয়েছে লিজার কাছে। বাড়ি, জমি, সঞ্চয় সবই তার শ্রম আর ঘাম দিয়ে গড়া। ইমরান কাঁপা গলায় বলে সে। তোমার নামে নিছো, নাও। বিদেশ থেইকা টাকা-পয়সা যা কামাইলাম, সবই তো তোমার কাছে। তোমার ইচ্ছা, তুমি যেটা ভালো বোঝো, সেটাই করো।
লিজা একটু থেমে বলে, শোনো, একটা কথা জানাই, তোমার টাকা-পয়সা আমার দ্বারা নষ্ট হবে না। এই আশ্বাস যেন ইমরানের বিষণ্নতায় এক বিন্দু শান্তি দেয়। কিন্তু জমি শুধু এক টুকরো মাটি নয়, সেটাতে ছিল তার ফিরে আসার স্বপ্ন, একসাথে থাকার আশা।
ইমরান ফোন করে, বারবার। কিন্তু লিজার সাড়া নেই। পরিচিত জনেরা নানা কথা বলে, কখনো সতর্কতা, কখনো কুৎসা। তোমার বউ তো এখন অন্য পুরুষের সঙ্গে ঘোরাফেরা করে। মনটা ধীরে ধীরে ভারী হয় ইমরানের। দূরদেশে রোজরাত তার মনে শুধু লিজা, আর সেই ছোট্ট সংসারের স্বপ্ন। কিন্তু লিজা কোথায় গেছে তার খবর ইমরান জানে না। একদিন খবর আসে লিজা অন্য একজনকে বিয়ে করেছে, সংসার করছে। ইমরান থমকে যায়। নিঃশব্দে ফাটে তার বুকের ভিতর আগুন। হায় হায়… এ কী সর্বনাশ হলো আমার! কাঁপা কণ্ঠে বলে সে। আমার বউ চলে গেল, আমার টাকা গেল, আমার জমিও গেল। যার জন্য এত বছর বিদেশে গলা শুকিয়ে কাজ করলাম, সেই আমারে ধোঁকা দিলো! হায়রে বিশ্বাস—কতটা নষ্ট, কতটা নিষ্ঠুর!
ভাই জামালের চোখে শুধু ভাইয়ের ভবিষ্যৎ নয়, আছে অভিজ্ঞতার আলো। সে ইমরানকে দেশে নিয়ে আসে, এবং নিজের হাতেই ছোট ভাইয়ের বিয়ে ঠিক করে দেয়।
শোন ইমরান, জামাল বলে, একজনের কাছে তো সব কিছু দিয়েছিলি টাকা, জমি, মন। এবার একটু হিসাব করে চল। নিজের ক্ষমতা নিজের কাছে রাখ। ইমরান হালকা হেসে বলে, ভাইয়া, সেই ভুল আর করব না। যা বোঝার দরকার ছিল, বুঝে গেছি। এবার অন্তরে হিসাবের খাতা খুলেছি।
বউ আসমা, শান্তশিষ্ট কিন্তু গভীর। সে স্বামী ইমরানকে বলে, শোনো? আমি সব চাই না। একটা মানুষ যতটুকু দিলে সে ভালো থাকতে পারে, ততটুকু আমাকে দিও। আমি বিশ্বাসের মূল্য বুঝি, মোহের নয়।
এই কথাগুলো যেন ইমরানের ভেতরে নতুন বিশ্বাসের বীজ বপন করে। এখন সে শুধু সম্পর্ক রাখে না, সম্পর্ক বুঝে চলতে শিখছে।
ইমরানের চোখে দুঃসহ ইতিহাসের ছায়া এখনো ঘোরে। আমার কাছে আর কিছু নাই, কাঁপা কণ্ঠে বলে সে, যেটা রোজগার করেছিলাম, সব গলে গেছে বিশ্বাসের আগুনে।
আরও একবার বিদেশের পথে পা বাড়ায় সে। তবে এবার আর আগের মতো না। বউয়ের কাছে আগের মতো টাকা পাঠায় না। পাঠালেও, প্রয়োজনের চেয়ে কম। আসমা ব্যথিত কণ্ঠে বলল, এই কিপটামি আমার ভালো লাগছে না। এইভাবে সংসার হয় না। তুমি ঠিক করো, শান্তিতে সংসার করবে কিনা? না আমাকে সাইড করে দেবে! ইমরান মাথা খারাপ হয়ে যায়, যেন আত্মদহন থেকে এক ধোঁয়া বেরিয়ে আসে, “হায় হায়… সর্বনাশ তো! একবার বউ চলে গেছে টাকা-পয়সার ভারে। এবার বউ যাবে কিপটামির কারণে।
দেশে ফিরে এসেছে ইমরান। ক্লান্ত হৃদয়ে একটাই চাওয়া আসমার, আমি একটা সুন্দর জীবন যাপন করতে চাই। আর টাকার লেনদেন নয়, একটু সুখের নিঃশ্বাস নিতে চাই। আসমা তাকিয়ে ইমরানের দিকে মৃদু হাসিতে বলে, তুমি হতাশ হয়ো না ইমরান। সব মানুষ একরকম হয় না। একজন চলে গেছে, তার মানে এই না যে সবাই একরকম। তোমার পাশে আছি তোমার পাশে থাকব। আসমার চোখে ছিল আশার দীপ্তি, আর ইমরানের চোখে ছিল যন্ত্রণার ছায়া। ইমরান বুঝে যায়, ভালোবাসা আর আস্থার জায়গায় যদি সঠিক মানুষ থাকে, তবে জীবনে সুখ আসে। তাদের জীবনে আসে একটি সন্তান। আর দুজনের মিলিত হৃদয়ে গড়ে ওঠে এক সংসার, যেটা শুধু ইট, কাঠ নয়, আত্মার স্থাপত্য।

মো : রাজিকুল ইসলাম, ​সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধি

সিংড়ায় প্রফেসর সাইদুর রহমানের পক্ষে জামায়াতের উঠান বৈঠক

মো : রাজিকুল ইসলাম, ​সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধি প্রকাশিত: রবিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১০:৫৮ এএম
সিংড়ায় প্রফেসর সাইদুর রহমানের পক্ষে জামায়াতের উঠান বৈঠক

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নাটোর-৩ (সিংড়া) আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থীর উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সিংড়া উপজেলার ১২ নং রামানন্দ খাজুরা ইউনিয়নের ভোগা গ্রামে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

​১২ নং রামানন্দ খাজুরা ইউনিয়ন ৮নং ওয়ার্ড জামায়াতের উদ্যোগে আয়োজিত এই উঠান বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী প্রফেসর সাইদুর রহমান। ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর হাবিবুর রহমান এর সভাপতিত্বে এবং ইউনিয়ন যুব জামায়াতের সভাপতি শহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভাটি পরিচালিত হয়।
​অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য আফছার আলী, উপজেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আ ব ম আমান উল্লাহ, উপজেলা সেক্রেটারী অধ্যাপক এনতাজ আলী সহ উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।

​সভায় বক্তারা আগামী নির্বাচনে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে ন্যায় এবং ইনসাফ এর প্রতীক দাঁড়িপাল্লাকে বিজয়ী করার মধ্য দিয়ে দুর্নীতি চান্দাবাজ ও বৈষম্য মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। এছাড়াও এলাকার বিভিন্ন সমস্যা ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন এবং আসন্ন সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী প্রফেসর সাইদুর রহমানের পক্ষে সাধারণ মানুষের কাছে সমর্থন ও দোয়া কামনা করেন।

প্রকাশকঃ কামরুন নেছা তানিয়া

হ্নীলা নৌবাহিনীর অভিযানে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র ও গ্রেনেড উদ্ধার

প্রকাশকঃ কামরুন নেছা তানিয়া প্রকাশিত: রবিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১০:৫৫ এএম
হ্নীলা নৌবাহিনীর অভিযানে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র ও গ্রেনেড উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক: টেকনাফের হ্নীলায় নৌবাহিনীর বিশেষ অভিযানে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার রাতে হ্নীলা ইউনিয়নের ৬নম্বর ওয়ার্ডের উলুচামারি কোনাপাড়া এলাকার শির্ষ সন্ত্রাসী মিজান ওরফে লম্বা মিজানের বাড়ীতে এ অভিযান চালানো হয়।
মিজান ওরফে লম্বা মিজানের বসতবাড়িতে বিপুল অস্ত্র মজুদ রয়েছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে নৌবাহিনীর বিশেষায়িত ফোর্স সোয়াডস এবং নৌবাহিনী কনটিনজেন্ট টেকনাফ যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে।
১টি বিদেশি ও ২টি দেশি পিস্তল, ১টি একনলা বন্দুক,১০ টি গ্রেনেড,গোলাবারুদসহ দেশী ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার করা অস্ত্র ও গোলাবারুদ পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য টেকনাফ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানা গেছে।